নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ঘিরে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে চট্টগ্রাম বন্দর ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে, এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা ইতোমধ্যেই প্রায় সম্পন্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল ও কোয়াড উদ্যোগ
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র “কোয়াড পোর্টস ফর ফিউচার” কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশে একটি বন্দর ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। এর লক্ষ্য বঙ্গোপসাগরে নিজেদের উপস্থিতি জোরদার করা এবং চীনের প্রভাব কমানো। সম্প্রতি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মধ্যে প্রাথমিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর তারা বন্দর নির্মাণ বা উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে মার্কিন প্রস্তাব।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সেন্টমার্টিন দ্বীপের এক-তৃতীয়াংশ প্রায় ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিতে আগ্রহী। প্রথমে দ্বীপের একটি অংশ বিদেশিদের জন্য পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হলেও, পরবর্তী সময়ে। সেটি সামরিক ঘাঁটিতে রূপ নিতে পারে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সরাসরি আপত্তি না তুললেও চীন ও ভারতের বিরোধিতার ঝুঁকি নিয়েই চিন্তিত
ভূ-রাজনীতির প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ
আমেরিকা-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ঠিকানা জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূল কেন্দ্র হয়ে উঠছে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর। মিয়ানমারে চীন-সমর্থিত গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থান নিতে সক্রিয় হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যু, মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরেও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে তারা।
“খ্রিস্টান রাষ্ট্র” গঠনের আশঙ্কা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে একটি “খ্রিস্টান রাষ্ট্র” গঠনের ষড়যন্ত্র চলছে, যা পূর্ব তিমুরের ঘটনার সঙ্গে তুলনীয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অতীতে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, এ ধরনের প্রস্তাব আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত হয়েছে এবং বিমান ঘাঁটি স্থাপনের কথাও তোলা হয়েছিল।
---ইউনূসকে ঘিরে বিতর্ক
একাধিক সূত্র দাবি করছে, পশ্চিমা স্বার্থ রক্ষার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে “প্রক্সি নেতা” হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁকে জাতিসংঘ মহাসচিব করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা তৈরি ও চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে বাধা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সার্বভৌমত্ব রক্ষার চ্যালেঞ্জ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় দেশকে যেন কোনো শক্তির হাতিয়ার বানানো না হয়—এ বিষয়ে সরকার ও জনগণ উভয়কেই সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।